ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

সারাদেশ

সুযোগ পেয়েও ডুয়েটে ভর্তি অনিশ্চিত মিথুনের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২:৩৬, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫
সুযোগ পেয়েও ডুয়েটে ভর্তি অনিশ্চিত মিথুনের

ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডুয়েটে) সুযোগ পেলেও আর্থিক সংকটের কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে মুদি দোকানের কর্মচারী ও অদম্য মেধাবী মিথুন রায়ের ভর্তি।

মিথুন রায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কুরুল গ্রামের দিনমজুর মিলন চন্দ্রের ছেলে।

 

স্থানীয়রা জানান, অভাবের মাঝেও বাবা-মা মিথুনের পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়েছেন। মিথুন স্থানীয় ইটাপোতা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে ৪.৭২ জিপিএ নিয়ে এসএসসি পাশ করেন। টাকার অভাবে কলেজে পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে তিনি মুদির দোকানে কাজ এবং প্রাইভেট পড়াশোনার মাধ্যমে নিজে খরচ যোগান। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ২০২৪ সালে রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা পাশ করেন ৩.৮৭ জিপিএ নিয়ে।

পরে বিএসসি পড়াশোনার জন্য ডুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা দেন মিথুন। সেখানে তিনি উত্তীর্ণও হয়েছেন। কিন্তু ভর্তি ফি, বই খাতা ও অন্যান্য খরচ মিলে প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকা প্রয়োজন, যা তার পরিবারের পক্ষে সামলানো সম্ভব নয়। ইতোমধ্যেই মিথুন জেলা প্রশাসকের কাছে আর্থিক সহায়তার লিখিত আবেদন জানিয়েছেন, কিন্তু কোনো সাড়া পাননি।

ইটোপোতা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মকবুল হোসেন বলেন, মিথুন অত্যন্ত মেধাবী। তাকে সহায়তা করলে সে স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।

মিথুনের মা প্রভাতি রানী বলেন, হামার মিথুন না কি ইঞ্জিনিয়ার হইবে। সেই জন্য মাইনসের (অন্যের) বাড়িতে ঝিয়ে কাজ করে টাকা দিয়েছি। এলা না কি ঢাকায় ভর্তি হতে ৪০/৫০ হাজার টাকা লাগে। হামরা গরিব মানুষ এত টাকা কোনটে পাই। কায়ো কি আছে মোর বেটাক টাকা দিয়ে পড়াইবে? । দিলে ভগবানের কাছে তার জন্য আর্শিবাদ করমো।  

মিথুনের বাবা মিলন চন্দ্র বলেন, খেয়ে না খেয়ে টাকা দিয়েছি মিথুন পড়ালেখা করেছে। তার স্বপ্ন ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কিন্তু গরিব মানুষ তাকে এত টাকা কেমনে দেই। কোথায় পাবো এত টাকা। কেউ সাহায্য করলে মিথুন বড় ইঞ্জিনিয়ার হইতো। তাই বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানান তিনি।

মিথুন নিজে বলেন, স্কুল জীবন থেকে স্বপ্ন দেখছি প্রকৌশলী হয়ে দেশের জন্য কাজ করব। কিন্তু এত টাকা দেওয়া আমার পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। সমাজের বিত্তবানদের সহায়তা কামনা করছি।

মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আসাদুল হক মন্টু বলেন, মিথুন গরিব হলেও অত্যন্ত মেধাবী। তাকে সহায়তা করলে সে স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। তিনি মিথুনকে সহায়তায় বিত্তবানদের সহায়তা কামনা করেন।  

এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।