ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৫ মহররম ১৪৪৭

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

অসুস্থ মাছ খেয়ে পরিবেশের উপকার করে ঈগল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:৫৫, অক্টোবর ১০, ২০১৮
অসুস্থ মাছ খেয়ে পরিবেশের উপকার করে ঈগল জলাভূমির বিপন্ন পাখি ‘মেটেমাথা-কুরাঈগল’। ছবি: আবু বকর সিদ্দিক

মৌলভীবাজার: নিভে আসছে বিকেলের আলো। জলাভূমিতে পরিপূর্ণ এই এলাকাগুলোতে তখন মায়াবী স্নিগ্ধতা। পাকা রাস্তার পর মাটির রাস্তা ধরে বাইক্কা বিলে পৌঁছানোমাত্রই যে পাখিটি স্বাগত জানালো তার নাম ‘মেটেমাথা-কুরাঈগল’। প্রাকৃতিক জলাভূমিগুলো ধ্বংসের কারণে তাদের অবস্থা আজ অনেকটাই বিপন্ন।

সম্প্রতি বাইক্কা বিলে পা রেখে অনুধাবন করা গেল- পৃথিবীর অন্য শীতপ্রধান দেশ থেকে শীতের পরিযায়ী পাখিরা আর ক’দিন পরেই আসতে শুরু করে দেবে এখানে। কিচিরমিটির শব্দে ছড়াবে গভীর সৌন্দর্য।


 
হাওরপাড়ের বাসিন্দা মিন্নত আলী সে কথাই রেশ টেনে বলে উঠেন- আর কিছুদিন পরেই আসলেই দেখতে পাবেন কত শত পরিযায়ী পাখিদের।
 
সাদা আর কালোর রঙে একটি বড় আকারের পাখি বাইক্কা বিলের পাখি পর্যবেক্ষণ টাওরের উপর দিয়ে ক্রমাগত উড়ছে আর উড়ছে। বিরতিহীন উড়াউড়ি জানান দিচ্ছে ক্ষুধার্ত অবস্থার কথা। মাছের সন্ধানে দিব্বি পাড় করছে সময়। গতিপ্রকৃতি আর শারীরিক স্থুলতা দেখে চিনতে অসুবিধে হয় না এই বড় আকারের শিকারি পাখিটির নাম ‘মেটেমাথা-কুরাঈগল’।
 
এ পাখিটির ইংরেজি নাম Grey-headed Fish Eagle এবং বৈজ্ঞানিক নাম Haliaeetus ichthyaetus। এরা অনেক জোরে তীক্ষ্মস্বরে ডাকে। ছোঁ মেরে শিকার ধরে।  

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং প্রখ্যাত বন্যপ্রাণি গবেষক ড. মনিরুল এইচ খান বাংলানিউজকে জানান, এই পাখিটি সারাদেশেই আছে। তবে পর্যাপ্ত বা ব্যাপক সংখ্যায় নেই। এদের সংখ্যা অনেক কমে গেছে এখন।
 
এর আকৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈগলেরা চিলের চেয়ে বড়। এই ঈগলটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৭০ থেকে ৭৪ সেন্টিমিটার। এদের মাথা, গলা ও ঘাড় ধুসর রঙের। ডানা বাদামি তবে বুক ও পেট লালচে বাদামি। সাদা লেজের শেষপ্রান্তে রয়েছে কালো রঙের অর্ধবৃত্তাকার ছাপ।
 
উপকার প্রসঙ্গে এ গবেষক বলেন, কুরাঈগলেরা মূলত মাছশিকারী পাখি। তাই আমাদের দেশের জলাভূমির আশপাশে এদের বেশি দেখা যায়। অসুস্থ মাছ খেয়ে পরিবেশের উপকার করে ঈগলেরা। পানির উপর প্রথম ভেসে উঠা অসুস্থ মাছকে ছোঁ মেরে ধরে গাছের ডালে নিয়ে খেয়ে ফেলে।
 
তিনি জানান, সারাদেশে প্রাকৃতিক জলাভূমিগুলো কৃত্রিম জলাভূমিতে পরিবর্তিত হয়ে মাছের ঘের বা ফিশারি হয়ে যাওয়ায় মাছের উপর নির্ভর করে থাকা পাখিগুলোর অস্তিত্ব অনেকটাই আজ হুমকির সম্মুখিন।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৮
বিবিবি/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।